প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) প্রথম শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে ২০২৪-২৫ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ হয়েছে। বায়ার্ন মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় পরশু রাতে ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন পিএসজির সাত ফুটবলার আছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা একাদশে।
ব্যালন ডি’অর তো পরের আলোচনা, কিন্তু ভক্তরা এখনই তাঁকে ডাকতে শুরু করেছেন ‘ব্যালন দুয়ে’! মাত্র ১৯ বছর বয়সী তরুণ যা করে দেখিয়েছেন, এমন আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আক্রমণ, মধ্যমাঠ, রক্ষণ—সব জায়গায় তাঁর বিচরণ। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন পিএসজির জয়ের নায়ক দিজিরে
সব কিছু ঠিক থাকলে হয়তো মেয়েকে নিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের উদযাপন করতে পারেন লুইস এনরিকে। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস। দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগে না ফেরার দেশে চলে গেছে এনরিকে কন্যা জানা। আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় গত রাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রয়াত কন্যার কথা মনে পড়ল এনরিকের।
শেষ বাঁশি বাঁজার পর আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় শুরু প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) উদযাপন শুরু। প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের আনন্দে পুরো পিএসজি দলই হয়ে পড়ে আবেগপ্রবণ।গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা, ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমিসহ অনেকেই ছিলেন অশ্রুসিক্ত। এ অশ্রু কান্নার নয়, এটা যে আনন্দের।
বায়ার্ন মিউনিখের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। খেলাটা ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান ও ফরাসি ক্লাব পিএসজির মধ্যে হলেও ব্যক্তিগত অর্জনের লড়াইও আছে এই ম্যাচে। চ্যাম্পিয়ন দলের কোনো ফুটবলারই ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জেতার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে যাবেন। এর মধ্যে
ঘরের মাঠে পিএসজির লক্ষ্য কী, সেটি সোজাসুজি বলে দিলেন দলটির কোচ লুইস এনরিকে—জয় চাই তাদের। জয় চান আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতাও। আর সেটির জন্য যা কিছু করা দরকার, তা করবে তাঁর দল।
সুপারম্যান, বাজপাখি—ইন্টার মিলানের গোলরক্ষক ইয়ান সোমেরের গত রাতের পারফরম্যান্স দেখে এসব উপাধিই মনে আসবে। প্রাণপণে লড়তে থাকা বার্সেলোনাকে বলতে গেলে তিনিই হারিয়ে দিয়েছেন। গোলপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে বার্সার একের পর এক শট ফিরিয়ে দিয়ে সোমের বনে গেলেন ম্যাচের মহানায়ক।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয়ে উঠছেন লামিনে ইয়ামাল। বড় মঞ্চে কীভাবে জ্বলে উঠতে হয়, সেটা যেন ভালো করেই জানেন তিনি। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে গত রাতে চোখ ধাঁধানো এক গোল করেছেন। সেটাও চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে।
জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার ওপর গত রাতে কী ভর করেছিল, সেটা তিনিই ভালো জানেন। পিএসজির রক্ষণদুর্গে বারবার হানা দেওয়া আর্সেনালকে গোলই করতে দেননি। যত ভাবেই গোলের চেষ্টা করুক না কেন, দোন্নারুম্মার বীরত্বের কাছে বারবার হার মানতে হয়েছে আর্সেনালকে।
ম্যাচের শেষ বাঁশি না বাজা পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচ নিয়ে বলার উপায় নেই। ম্যাচের ফল যখন অনেকেই ধারণা করে ফেলেন, সেই মুহূর্তে চমক দেখায় মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গত রাতে কার্লো আনচেলত্তির দল পেয়েছে রুদ্ধশ্বাস এক জয়।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ওঠার অর্ধেক কাজ প্রথম লেগেই সেরে রাখে আর্সেনাল। রিয়াল মাদ্রিদকে তখন হারিয়েছিল ৩-০ গোলে। কিন্তু দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটা যখন রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে, তখন আগে থেকেই ম্যাচের ফল বলে দেওয়া কঠিন।
প্রত্যাবর্তনের গল্প রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে আর কোন দল সুন্দর করে লিখতে পারে? এটা রীতিমতো গবেষণার ব্যাপার। তবে এবার আর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখতে পারল না রিয়াল। যে চ্যাম্পিয়নস লিগ তাদের এক রকম সম্পত্তি হয়ে গেছে, সেই টুর্নামেন্ট থেকেই এবার কোয়ার্টার ফাইনালেই বেজে গেল বিদায়ঘণ্টা।
হারার আগে হারে না রিয়াল মাদ্রিদ। রেফারির শেষ বাঁশি না বাজা পর্যন্ত বলার উপায় নেই যে তারা জিতবে নাকি হারবে। তবে এবার তাদের পাড়ি দিতে হবে অনেক কঠিন পথ। গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আর্সেনালের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে হারে রিয়াল। সেমিফাইনালে উঠতে হলে কমপক্ষে ৪-০ গোলে জিততে হবে।
‘কামব্যাক কিং’ (প্রত্যাবর্তনের রাজা)—ফুটবলে এমন অ্যাখ্যা কেবল এক দলেরই আছে! কিন্তু তারপরও রিয়াল মাদ্রিদ পারবে তো। তিন গোলে পিছিয়ে থেকে প্রত্যাবর্তন করাটা সহজ কথা নয়। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের অতীত ইতিহাস কিছুটা হলেও স্বপ্ন দেখাচ্ছে তাদের। আর সান্তিয়াগো বার্নাব্যু স্টেডিয়াম জোগাচ্ছে সেমিফাইনালের ওঠার
টানা ২৪ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হার মানল বার্সেলোনা। সিগনাল ইদুনা পার্কে গত রাতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে বার্সেলোনা। ম্যাচ হারলেও সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে বার্সা। সেমিতে উঠেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নে বিভোর কাতালানরা।
অবনমন অঞ্চলঘেঁষা দল দেপোর্তিভো আলাভেস। তাদের বিপক্ষে জিততে গিয়ে ঘাম ছুটে গেল রিয়াল মাদ্রিদের। বোঝাই যাচ্ছে চ্যাম্পিয়নস লিগে আর্সেনালের বিপক্ষে হারের ধাক্কা সেভাবে কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা। তবে ১-০ গোলের জয় স্বস্তি দিচ্ছে লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে টিকে।
বড় মঞ্চে রিয়াল মাদ্রিদের ভয়ংকর রূপটা তো অনেকেই দেখেছেন। পিছিয়ে পড়েও শেষ মুহূর্তে লন্ডভন্ড করে দিয়ে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড তাদের অনেক। কিন্তু গতকাল আর্সেনালের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদকে একটু অচেনাই লাগল। আকস্মিক ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেল কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল।